বাংলাদেশে খাদ্য তালিকায় বড় অংশ দখল করে আছে দানাজাতীয় খাদ্য (চাল,গম,ভূট্টা)। যেমন-মাথাপিছু দৈনিক গড়ে যেখানে দানাজাতীয় খাদ্য ৫২৮ হতে ৪৫৪ গ্রাম, সেখানে শাক-সবজিসহ মূল জাতীয় খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ ৭০ গ্রাম, যা উদ্ভিদ খাদ্যের মাত্র ৬ শতাংশ। এর মধ্যে আলু ও মূলজাতীয় সবজি বাদ দিলে শাক সবজির পরিমাণ দাঁড়ায় মাত্র ৩০-৩৫ গ্রামের মতো অথচ প্রয়োজন প্রায় ২০০ গ্রাম। এদিকে সকল শ্রেণির মানুষের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা প্রয়োজন। সেজন্য খাদ্যমূল্যবৃদ্ধি, প্রাকৃতিক বিপর্যয়, আবহাওয়ার পরিবর্তন, প্রযুক্তির উন্নয়ন ও উৎকর্ষতায় ভারসাম্যহীনতা, জমির পরিমাণগত ক্রমহ্রাসতা, জনসংখ্যা ও খাদ্যসহ সামগ্রিক চাহিদা মোকাবেলায় শাক-সবজির উৎপাদন বৃদ্ধি ও ব্যবহারই একমাত্র সহজতর উপায়। যারা উৎপাদনের সাথে জড়িত সেই কৃষি পেশারই প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ খাদ্যাভাব ও পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। এছাড়াও অন্যান্য পেশাসহ প্রায় ৮৬ ভাগ মানুষ উপযুক্ত পরিমাণ সুষম খাদ্য ঘাটতি ও পুষ্টিহীনতার শিকার অর্থাৎ তারা দারিদ্র সীমার নিচে বাস করে। আর ৪০ ভাগ মানুষ আলট্রা-দারিদ্র অর্থাৎ চরম দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করছে। বাংলাদেশে খাদ্য ঘাটতির সাথে পুষ্টি সমস্যা প্রকট । নিচের সারণি থেকে সহজে বোঝা যাবে যে বাংলাদেশের লোকেরা কেন পুষ্টিহীনতার শিকার হয়ে নানা প্রকার রোগ আক্রান্ত হচ্ছে
শাক-সবজি বাড়ির আশপাশে খণ্ড বা পতিত জমিতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে চাষাবাদ করা হয়। এতে বেশি খরচ ও পর্যাপ্ত উপকরণের দরকার হয় না। সবজি উৎপাদনে নিবিড়ভাবে কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি হয় এবং পুষ্টিযুক্ত খাদ্য স্বল্প সময়ে পাওয়া যায়। পারিবারিক চাহিদা মিটিয়ে এখান থেকে উৎপাদিত শাক-সবজি বিক্রিও করা সম্ভব। যা থেকে অতিরিক্ত আয় হতে পারে। আমাদের দেশে প্রায় দেড় কোটি বসতবাড়ির আওতায় প্রায় ৫ ভাগ জমি রয়েছে। কিন্তু এটা অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে এসব বসতবাড়ির আঙ্গিনার পতিত জমির সুষ্ঠু ব্যবহার অধিকাংশ ক্ষেত্রেই উৎপাদনের জন্য হচ্ছে না। যার ফলে আমাদের দেশের মানুষ পুষ্টিহীনতায় ভুগছে ও আর্থিক দিক দিয়ে দরিদ্র থাকছে। বসতবাড়ির আঙ্গিনার সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করার মাধ্যমে কাজের সুযোগ সৃষ্টিসহ বাড়তি আয় করা ও শাক-সবজির চাহিদা বহুলাংশে পূরণ করা সম্ভব।
বাংলাদেশের লোকেরা উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের লোকের তুলনায় দানাজাতীয় খাদ্য বেশি পরিমাণে গ্রহণ করে থাকে ৷
চিত্র: বাংলাদেশ, উন্নয়নশীল ও উন্নত দেশের দানাজাতীয় শস্য ও শাক-সবজি উৎপাদনের তুলনামূলক অবস্থা
শাক-সবজি ফলনশীলতা ও খাদ্য ঘাটতি পূরণে ভূমিকা
সরকারিভাবে খাদ্য উৎপাদন পরিকল্পনায় ধান উৎপাদনের জন্য সবচেয়ে বেশি জোর দেওয়া হয়ে থাকে । এমনকি সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও ক্রয় করার বিষয়ে প্রতি বছর খাদ্য শস্য সংগ্রহ অভিযান গ্রহণ করা হয়। অথচ খাদ্য ঘাটতি পূরণে শাক-সবজির অবদান বেশি এবং গুরুত্বপূর্ণ। দানা জাতীয় শস্য যেমন- ধান, গম, ভূট্টা, জোয়ার, চিনা, কাউন ইত্যাদির চেয়ে অধিকাংশ শাক-সবজির হেক্টর প্রতি বেশি ফলনশীল (সারণি)। এছাড়া সবজি উৎপাদনে দানাজাতীয় শস্য অপেক্ষা কম সময়ের প্রয়োজন হয়।
সারণি-দানাজাতীয় ও শাক-সবজির হেক্টর প্রতি ফলন (মে.টন) ও উৎপাদনের মেয়াদকাল
উল্লিখিত সারণি থেকে সহজে বোঝা যায় যে স্বল্প সময়ে সীমিত জমিতে শাক-সবজি উৎপাদন করে সহজেই খাদ্য ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব। যেহেতু দানাজাতীয় শস্য উৎপাদনে সময়কাল বেশি লাগে এবং জমির পরিমাণও বেশি প্রয়োজন হয়। অন্যদিকে একই পরিমাণ খাদ্য উৎপাদনে শাক-সবজির জন্য জমি এবং সময়কাল উভয়ই কম প্রয়োজন হয়।
বাংলাদেশের মানুষ খাদ্য ঘাটতিজনিত সমস্যায় দু'ভাবে ভুগছে। যেমন-
(ক) পরিমাণগত ও (খ) সুষম ও পুষ্টি চাহিদাগত।
(ক) পরিমাণগত ঘাটতি
কৃষি মন্ত্রণালয়াধীন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এর তথ্যানুযায়ী বাংলাদেশ দানাজাতীয় খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার দ্বারপ্রান্তে। তথাপিও বাংলাদেশ সরকারকে প্রতিবছর ২৫-৩০ লক্ষ টন খাদ্যশস্য আমদানী করতে হয়। প্রাকৃতিক দূর্যোগের কারণে কোন কোন বছর আরো বেশি পরিমাণে খাদ্যশস্য আমদানি করার প্রয়োজন হয়। শাক-সবজি যেহেতু একক জমিতে দানাজাতীয় খাদ্যশস্য অপেক্ষা বেশি উৎপাদন করা সম্ভব, সেহেতু শাক-সবজির উৎপাদন বৃদ্ধি করা ছাড়া পরিমানগত ঘাটতি পূরণের অন্য কোন সহজ উপায় নেই ।
(খ) সুষম ও পুষ্টি চাহিদাগত
উনিশশত তিয়াত্তর সনে দু'জন বিদেশি (মূর ও এ্যাডফিল্ড) বাংলাদেশের মানুষের পুষ্টি প্রাপ্তি সম্পর্কিত অবস্থা তুলে ধরেছেন। তাতে উল্লেখ করেছেন যে সকল প্রকার ভিটামিন ও অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের অভাবে বাংলাদেশের লোকেরা দারুণভাবে ভুগছে। বিভিন্ন পুষ্টি জরীপে দেখা গেছে বয়সের তুলনায় খাট এবং উচ্চতার তুলনায় কম ওজন বিশিষ্ট ছেলে ও মেয়ে শিশুরা অপুষ্টিজনিত কারণে এরূপ অবস্থার স্বীকার হয়েছে। পুষ্টি জরীপে গোমেজ বিভাগ অনুযায়ী ৩.৫% শিশু স্বাভাবিক ওজন বিশিষ্ট এবং ২৫.৮% শিশু মারাত্মকভাবে পুষ্টিহীনতার স্বীকার এবং অত্যল্প ও মধ্যম পুষ্টিহীনতার শতকরা অংশ হলো যথাক্রমে ১৭.৭ ও ৫৩.০ ভাগ। ১৯৯৪ সালে জুন মাসে ইউনিসেফ কর্তৃক প্রকাশিত রিপোর্টে বাংলাদেশে শতকরা ৯৩ জন শিশু অপুষ্টিতে আক্রান্ত উল্লেখ করা হয়েছে। এদিকে ১৯৬২-৬৪ সন পর্যন্ত ৩টি জাতীয় পুষ্টি জরীপে বয়স ও লিঙ্গভেদে বিভিন্ন শ্রেণির খাদ্য গ্রহণের মধ্যে মূল জাতীয়, শাক সবজি ও ফল জাতীয় খাদ্য গ্রহণের পরিমাণ ক্রমান্বয়ে কমে গেছে।
খাদ্য ঘাটতিতে বিশেষত: শাক-সবজির ঘাটতিতে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের অভাবজনিত অপুষ্টির মধ্যে ভিটামিন 'এ' এর অভাবে চোখের অসুখ (Xerosis Conjunctive) বেশি দেখা যায়। ভিটামিন 'এ' -এর অভাবে রাতকানা রোগের প্রকোপতার জাতীয় হার শতকরা ৩.২ ভাগ। ০.৪ বছর বয়সের ১-৩ শতাংশ এবং ৫-১৫ বছরের ৩,৮ শতাংশ শিশু রাতকানায় ভোগে। প্রতি বছর ৩০,০০০-৪০,০০০ শিশু শুধু ভিটামিন 'এ' র অভাবে পুরোপুরি অন্ধ হয়ে যায়, যাদের প্রায় অর্ধেকই ০১ বছরের মধ্যে মারা যায়।
আমরা খাদ্য গ্রহণ করি শরীরের পুষ্টি চাহিদা পূরণের জন্য। শাক-সবজি খাদ্য পুষ্টির দিক থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কেননা শাক-সবজিতে বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় খাদ্যোপাদান বিভিন্ন অনুপাতে বিদ্যমান। ভিটামিন ও খনিজ পদার্থের প্রাচুর্যের কারণে এদেশে শাক-সবজির উৎপাদন ও ব্যবহার বৃদ্ধি করা আবশ্যক। কারণ ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ দেহ বৃদ্ধি, পুষ্টিসাধন ও দৃষ্টি শক্তিসহ শরীরের ক্ষয়পূরণ, রোগব্যাধি প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি ইত্যাদির সাথে সম্পর্কিত। যদি কেউ দু'বেলা পেট পুরে খাবার খায় তাহলেই তাকে বলা যাবে না যে তার খাদ্য ঘাটতি নাই । মানবদেহ নানা প্রকার উপাদান দিয়ে গঠিত। তাই শরীর সুস্থ থাকা ও স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠার জন্য সব ধরনের পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করা দরকার। দানাজাতীয় খাদ্যে মানব শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের খাদ্যোপাদান বিদ্যমান নাই। মানবদেহের প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানগুলো হলো-
(ক) শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট বা শ্বেতসার
(খ) আমিষ বা প্রোটিন
(গ) স্নেহ/তেল বা চর্বি
(ঘ) খাদ্যপ্রাণ বা ভিটামিন
(ঙ) খনিজ লবণ
(চ) পানি ও
(ছ) ফাংশনাল ফুড বা দেহ যন্ত্রাদির কার্যঘটিত খাদ্য
আমাদের দেশের জনসংখ্যার প্রায় ৭০% রক্তস্বল্পতা রোগে ভোগে। ৫ বছরের নিচে ৭৩ শতাংশ, ৫-১৪ বছর বয়সী ছেলে এবং মেয়েদের ৭৫ শতাংশ, গর্ভবতী ও প্রসূতি নয় এমন মহিলাদের প্রায় ৭৪ শতাংশ এমনকি ৬০ শতাংশ পুরুষ রক্তস্বল্পতায় ভোগে ।
গ্রামীণ এলাকায় ভিটামিন বি২ -এর অভাবজনিত রোগ সাধারণভাবে দেখা যায়। ১৪.৪ শতাংশ জনগণ ভিটামিন বি২ -এর অভাবে ভোগে। তাদের মধ্যে ৫-১৪ বছরের ছেলেমেয়েদের মধ্যেই এ রোগের প্রকোপ বেশি দেখা যায়।
মোট জনসংখ্যার শতকরা ১০ জন দৃশ্যমান গলগন্ড রোগে ভোগে। দেশের উত্তরাঞ্চলের জেলাসমূহের প্রায় ৮০% লোক বিভিন্ন গ্রেডের গলগন্ড রোগে ভোগে।
উপযুক্ত পরিমাণ শাক-সবজি নিয়মিত গ্রহণ করলে রাতকানা, অন্ধত্ব, নানা প্রকার চর্মরোগ, স্কার্ভি, মুখের ভিতরে ও ঠোটের কোনায় ঘা, রিকেট, এনেমিয়া, গলগন্ড ইত্যাদি রোগ হতে নিরাপদ থাকা সম্ভব ।
লিঙ্গ ও বয়সভেদে পুষ্টি চাহিদার তারতম্য
সকল পেশার এবং সব ধরনের পরিশ্রমী ও দৈহিক গঠনের মানুষের একই ধরনের ও একই পরিমাণ খাবারের প্রয়োজন হয় না। দীর্ঘদেহী, কঠোর পরিশ্রমী (হালচাষ করা, লাকড়ি কাটা, মাটি কাটা, পাহাড় ও বনে জঙ্গলে কাজ করা, নৌকার বৈঠা টানা ইত্যাদি), কম দৈহিক পরিশ্রমী (বিভিন্ন কাজ তদারকি করা, অফিসে বসে কেরানীগিরি বা ডেস্কে বসে করা), শিশু, খেলোয়াড়, গর্ভবতী বা দুগ্ধবতি মহিলা প্রত্যেকের মধ্যে খাদ্য গ্রহণের পার্থক্য আছে। শিশু বা বাড়ন্ত ছেলেমেয়েদের, গর্ভবতী ও দুধদানকারী মহিলাদের জন্য আমিষ, ভিটামিন ও ধাতব পদার্থযুক্ত খাবার অন্যদের তুলনায় তুলনামূলকভাবে বেশি প্রয়োজন। আবার যারা দৈহিক পরিশ্রম বেশি করে তাদের জন্য শ্বেতসার বা শর্করা জাতীয় খাদ্য বেশি প্রয়োজন। গর্ভবতী মহিলাদের প্রথম ৩ মাসের পর ভ্রূণের মস্তিষ্ক, মাংসপেশি, হাড় ও অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ পরিপূর্ণতা লাভ করে ।
তাই গর্ভের ২য় ও ৩য় মাসে পুষ্টি চাহিদা সবচেয়ে বেশি এবং মা প্রয়োজনীয় পুষ্টিযুক্ত খাদ্য গ্রহণ না করলে জটিল সমস্যায় পড়ে। শিশু স্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেলে ৫ মাস বয়সের সময় তার ওজন হয় জম্মের ওজনের দ্বিগুণ, ১ বছর বয়সে তিনগুণ এবং ২ বছর বয়সে হবে চারগুণ। জীবনের ১ম দুবছর বয়সের মধ্যেই মানবদেহের ৮০% মস্তিষ্ক বৃদ্ধি ও গঠন হয়ে থাকে। সেজন্য এ সময়কালে প্রচুর পরিমাণ শাক-সবজি ও ফল খাওয়া প্রয়োজন। তবে ৪০ বছর বয়সের পর স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য ডিম ও তৈলজাতীয় খাদ্য পরিহার বা সীমিত করে শাক-সবজি বেশি গ্রহণ করা উচিত।
বাংলাদেশের লোকেরা যেহেতু উপযুক্ত পরিমাণ শাক-সবজি ও ফল নিয়মিত খাদ্য তালিকায় গ্রহণ করতে পারে তাই তারা দূর্বল ও বিভিন্ন রোগে ভোগে। ডাক্তারি মতে যারা বা যে দেশের লোকজন বেশি শাক-সবজি ও ফল খায় বা নিরামিষভোজী হয় তাদের স্বাস্থ্য বেশি ভালো থাকে এবং তারা দীর্ঘজীবি হয়। নিচের সারণিতে বাংলাদেশ ও বিশ্বের কয়েকটি দেশের শাক-সবজি ও ফলের উৎপাদন দেখানো হলো ।
সারণিঃ বাংলাদেশের তুলনায় বিশ্বের কয়েকটি দেশে দৈনিক মাথাপিছু গড় শাক-সবজি ও ফল উৎপাদন ।
খাদ্য চাহিদা পূরণের সাথে খাদ্যকে সুষম ও পুষ্টিযুক্ত করার জন্য শাক সবজি খেতে হয়। কারণ শাক-সবজি ভিটামিন ও খনিজ জাতীয় উপাদানের প্রধান উৎস। তাই খাদ্যকে সুষম করতে হলে শ্বেতসার ও ডাল জাতীয় খাদ্যের সাথে দৈনিক কী পরিমাণ শাক-সবজি খাওয়া উচিত তা নিচের সারণিতে দেখানো হলো।
খাদ্যের নাম | দৈনিক প্রয়োজন (গ্ৰাম) | |
মহিলা | পুরুষ | |
চাল/আটা | ৫০০ | ৩৭৫ |
ডাল | ৯০ | ৪৫ |
ছোট মাছ | ৬০ | ৬০ |
আলু, মিষ্টি আলু | ১২৫ | ৬০ |
শাক (কচু, পালং, পুঁই) | ৯০ | ১৫৫ |
সবজি (উচ্ছে, পটল, লাউ, ঢেঁড়শ ) | ৯০ | ৯০ |
ফল (আম, কুল, পেয়ারা) | ২/১ টি | ১ টি |
তৈল | ৬০ | ৬০ |
অনাবাদি ও পতিত জমির সদ্বব্যবহারে সবজি চাষের গুরুত্ব
বাংলাদেশে জনসংখ্যা ১.৪৮% হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে প্রতি বছর ১% হারে আবাদি জমি চাষের আওতা বহির্ভূত হচ্ছে। সেইসাথে কৃষি খানা বা পরিবার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় জমি খণ্ড বিখণ্ড হচ্ছে। মানুষের ভোগের সুবিধা বৃদ্ধির জন্য বসতবাড়ি, স্কুল-কলেজ, মসজিদ, মন্দির, হোটেল রেস্তোরা, বিনোদনকেন্দ্র-ক্লাব, সড়কপথ, রেললাইন ইত্যাদি নতুন নতুন গড়ার ফলে এর আশেপাশে অনেক জমি অব্যাবহৃত ও অনাবাদি হিসেবে পড়ে থাকছে। এসব জমিগুলো সাধারণত উঁচু হয় এবং অনেকটা অপরিচ্ছন্ন ও অস্বাস্থ্যকর অবস্থার সৃষ্টি করে। বাংলাদেশে প্রায় দেড়কোটি কৃষক পরিবার বা খানা আছে। ২৮৩৫ কিলোমিটার রেলপথ, ২১৫ কিলোমিটার সড়কপথ (জাতীয় মহাসড়ক, আঞ্চলিক মহাসড়ক, সংযোগ মহাসড়ক, জেলা সড়ক, উপজেলা সড়ক আছে), ১৩৬২ টি হাসপাতাল ও ডিসপেনসারি, ৮০৩৯৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৪৩৭৮ নিম্ন মাধ্যমিক, ১৪৮৯৬টি মাধ্যমিক, ১৯০২টি উচ্চ মাধ্যমিক, ২৭৬টি টেকনিক্যাল প্রতিষ্ঠান, ৯৯৫৩টি মাদ্রাসা ও বিপুল সংখ্যক সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিল্প-কারখানা এবং টাংগাইল জেলার আয়তনের সমপরিমাণ সারাদেশে জমির আইল আছে। এ ছাড়াও ৭০০০ কিলোমিটার প্রধান নদী ও ২৪০০০ কিলোমিটার শাখা-প্রশাখা নদী আছে ।
বাংলাদেশে মোট আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ৯০৯৪০০০ হেক্টর। এর মধ্যে প্রায় ২৭৮০০০ হেক্টর জমি আবাদযোগ্য জমি পতিত থাকে। বাড়ির ও প্রতিষ্ঠানের আশপাশসহ রেলপথ, সড়কপথের ধারের অনাবাদি ও আবাদযোগ্য পতিত জমিতে পরিকল্পিতভাবে শাক-সবজি ও ফল উৎপাদন করা যেতে পারে। এতে খাদ্য চাহিদা পূরণ ও পুষ্টিহীনতা দূরিকরণসহ অধিকহারে সবজি খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা সম্ভব হবে। পতিত ও অনাবাদি জমিতে শাক-সবজি ও ফল উৎপাদন করা হলে পরিবেশের ভাসসাম্য রক্ষা করা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগজনিত ক্ষতি কমিয়ে উৎপাদন নতুন মাত্রা যোগ হবে। এরফলে সারাবছর পারিবারিক খাদ্য, পুষ্টি ও অন্যান্য দ্রব্যাদির চাহিদাও নিশ্চিত হবে ।
অনাবাদি ও পতিত জমিকে নিবিড়ভাবে ব্যবহারের জন্য স্থান বিশেষের ফসল পঞ্জিকা ও পরিকল্পনা প্রণয়ন করা উচিত। জমির আইলসহ অব্যবহৃত জমিতে দ্রুত বর্ধনশীল ও স্থানের প্রতি সংবেদনশীলতা দেখে শাক-সবজি নির্বাচন করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। এ স্থানগুলোকে একটি আদর্শ উৎপাদন ক্ষেত্র হিসেবে রূপান্তর করা যায়। যার দ্বারা খাদ্য, পুষ্টি চাহিদা মেটানোসহ বাড়তি আয় ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হয়। আমাদের দেশে ভূমিহীন, প্রান্তিক, ছোট, মাঝারি ও বড় কৃষক পরিবার আছে। ভূমিহীন ও প্রান্তিক চাষির বাড়ির আঙ্গিনায় জমি নেই। আবার ছোট ও প্রান্তিক চাষির বাড়ির আঙ্গিনায় জায়গা থাকলেও তা সামান্য। মাঝারি চাষির বাড়ির আঙ্গিনায় কিছু জায়গা থাকে, আর বড় চাষির বাড়ির আঙ্গিনায় পর্যাপ্ত জায়গা থাকে। চাষির ধরন অনুযায়ী শাক-সবজি চাষের পরিকল্পনা নিচে উল্লেখ করা হলো-
চাষীর ধরন ও পরিবারের আকার ভিত্তিক শাকসবজি চাষের পরিকল্পনা
১। ভূমিহীন ও প্রান্তিক পরিবারের জন্য পরিকল্পনা-এ জাতীয় চাষীর বাড়ির ঘরের চালে, বেড়া, বাড়ির ঘেরা বা বেড়া, ঘরের পিছনে লতানো সবজি ছাড়া মান বা ওলকচু লাগানো যায়।
ক) মৌসুমি পরিকল্পনা-রবি মৌসুম (১৬ অক্টোবর-১৫ মার্চ)
ঘরের চালে; লাউ, মিষ্টি কুমড়া জন্মানো যায়। ঘরের পাশে: বেগুন, ডাঁটা, ধনেপাতা, মরিচ, পেঁপে জন্মানো যায়।
(খ) মৌসুমি পরিকল্পনা খারিফ-১ (১৬ মার্চ-১৫ জুন)
ঘরের চালে: চালকুমড়া, মিষ্টি কুমড়া, পুঁইশাক, মেটে আলু বাউনি দিয়ে চালে জন্মানো যায় । ঘরের পাশে: বরবটি, মরিচ, কালোকচু, বেগুন, ডাটা, সাজিনা, মানকচু, ওলকচু, জন্মানো যায়।
(গ) মৌসুমি পরিকল্পনা-খারিফ-২ (১৬ জুন-১৫ অক্টোবর)
ঘরের চালে: ঘরের পাশে পূর্ব ও দক্ষিণ দিকে আগাম দেশি শিমের বীজ লাগায়ে চালে উঠায়ে দেওয়া যায়। ঘরের পাশে মৌসুমের শুরুতে পুঁইশাক, কামরাঙ্গা মরিচ, বারোমাসি মরিচ, বেগুন, থানকুনি, পুদিনা লাগানো যায়।
২। ছোট বা ক্ষুদ্র পরিবারের জন্য পরিকল্পনা বাড়ির আশেপাশে জমি আছে, কিন্তু তা দ’শতকের কম
ক) রবি মৌসুম (কার্তিক-ফাল্গুন)
ঘরের চালে/মাচায় চালে লাউ/মিষ্টি কুমড়া, মাচায় পটল লাগানো যায়। ঘরের পাশে মৌসুমের শুরুতে সীমিত আকারে ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, মূলা, বেগুন, লালশাক, পালংশাক, বাটিশাক লাগানো যায় ।
(খ) খারিফ-১ মৌসুম-চৈত্র-জ্যৈষ্ঠ) ঘরের চালে:
চালকুমড়া, মিষ্টি কুমড়া, গ্রীষ্মকালীন লাউ বাউনি দিয়ে চালে বা মাচায় চাষ করা যায়। গাছে- ধুন্দল, চিচিংগা, ঝিঙা, মেটে আলু জন্মানো যায়। মাচায়- করলা, কাঁকরোল, শশা, চিচিংগা, বরবটি জন্মানো যায়। সবজি বাগান- ঢেঁড়শ, গীমাকলমি, পুইশাক, ডাঁটা, মরিচ, পাটশাক, গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করা যায়। বেড়ায় খুঁটি হিসেবে সাজিনা লাগানো যায়।
(গ) খারিফ-২ মৌসুম (আষাঢ়-আশ্বিন)
ঘরের চালে ও আষাঢ়-শ্রাবণে শিমের বীজ লাগিয়ে ঘরের চালে বাঁশের কঞ্চি বা গাছে বাউনি দিয়ে উঠায়ে দেওয়া যায়।
ঘরের পাশে : মৌসুমের শুরুতে ডাঁটা, বেগুন, পুঁইশাক, গিমাকলমি চাষ করা যায়।
সবজির বাগান : বাড়ির আশেপাশের পতিত জমি সাধারণত ছোট, খণ্ড খণ্ড, বিভিন্ন আকারের, উঁচু নিচু, ছায়াযুক্ত বা খোলামেলা হতে পারে। এরূপ ক্ষেত্রে স্থান ও প্রয়োজন অনুযায়ী শাক-সবজি নির্বাচন করতে হবে। প্রায় সারাদিন রোদ থাকে এবং উঁচু সুনিকাশযুক্ত ও সেচের সুবিধা থাকলে সেখানে আশ্বিন থেকে শুরু করে বছরব্যাপী ৮-১০ রকমের শাক-সবজি করা যায়। বছরব্যাপি সবজি চাষের জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত। যেমন-
(ক) প্রথম খণ্ড জমি-মূলা/টমেটো-লালশাক-পুঁইশাক ।
(খ) দ্বিতীয় খণ্ড জমি-লালশাক + বেগুন-লালশাক-ঢেঁড়শ।
(গ) তৃতীয় খণ্ড জমি-বাটিশাক-পেঁয়াজ / গাজর-কলমিশাক-লালশাক ।
এছাড়া এসব জমির চারপাশ দিয়ে জীবন্ত বা বাঁশের বেড়া দিয়ে তাতে করলা, বরবটি, পটল, পুঁইশাক লাগানো যেতে পারে।
৩। মাঝারি পরিবারের জন্য পরিকল্পনা বাড়ির আশপাশে চাষযোগ্য জমির পরিমাণ দ’শতক থেকে পাঁচ শতক ।
(ক) রবি মৌসুম (কার্তিক-ফাল্গুন) – সম্পূর্ণ রবি মৌসুমে পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন শাক-সবজি জন্মানো যায় । বাগানাকারে লালশাক, পালংশাক, বাটিশাক, চীনাবাঁধাকপি, বাঁধাকপি, ফুলকপি, ওলকপি বীট, গাজর, মূলা, সবুজ ফুলকপি/ ব্রকোলি, মটরশুটি, টমেটো, বেগুন, আলু, শালগম, ঝাড়শিম, উচ্ছে, পটল লাগানো যায়। সবজি বাগানের কিনার দিয়ে ভুট্টা, অড়হর লাগানো যায়।
খ) খারিফ-১ মৌসুম (চৈত্র-জ্যৈষ্ঠ) - ঘরের চালে চালকুমড়া, গ্রীষ্মকালীন লাউ বাউনি দিয়ে উঠায়ে দেওয়া যায়। বেড়ায়/জাংলায় পুঁইশাক চাষ করা যায়। এ মৌসুমে গীমাকলমি, পুঁইশাক, ঢেঁড়শ, ধুন্দল, ঝিঙা, শশা, বরবটি, করলা, কাঁকরোল, চিচিংগা, গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করা যায়। মধ্য বৈশাখ পর্যন্ত কালো কচু, লতিরাজ কচু লাগানো যায় ।
(গ) খারিফ-২ মৌসুম (আষাঢ়-আশ্বিন)-মৌসুমের শুরুতে বেগুন, গীমা কলমি এবং মধ্য শ্রাবণ হতে আগাম শীতকালীন সবজি হিসেবে মূলা, ফুলকপি, টমেটো, লালশাক, পালংশাক, সর্ষেশাক, ধনেপাতা বপন করা যায়। মৌসুমের প্রথমদিকে দেশি শিমের বীজ বপন করা যায়। মধ্য শ্রাবণ থেকে লাউ বীজ বপন করা যায় ।
৪। মাঝারি পরিবারের জন্য পরিকল্পনা-বাড়ির আশপাশে পাঁচ শতকের বেশি চাষযোগ্য জমি।
(ক) রবি মৌসুম (কার্তিক-ফাল্গুন) - পুরো রবি মৌসুমের জন্য একক বা মিশ্র বাগান করা যেতে পারে। শীতকালীন যত শাক-সবজি আছে তা সবই অনায়াসে চাষ করা যায়। যেমন-লালশাক, পালংশাক, বাটিশাক, সশোক, মূলাশাক, চীনা বাঁধাকপি, বাঁধাকপি, ফুলকপি সবুজ ফুলকপি, টমেটো, বেগুন, ডাঁটা, গাজর, মেটে আলু, শালগম, স্কোয়াস, মটরশুটি, ঝাড়শিম, পটল, লাউ, উচ্ছে, মিষ্টিকুমড়া ও অন্যান্য । মাঘ-ফাল্গুনে মুখীকচু লাগানো যায় ।
(খ) খারিফ-১ মৌসুম (চৈত্র-জ্যৈষ্ঠ)- এ সময় গীমাকলমি, পুঁইশাক, লালশাক, ঢেঁড়শ, বেগুন, মিষ্টিকুমড়া, চালকুমড়া, ধুন্দল, ঝিংগা, চিচিঙ্গা, শশা, বরবটি, করলা, কাঁকরোল, গ্রীষ্মকালীন টমেটো ও অন্যান্য সবজি জন্মানো যায় । মধ্য বৈশাখ পর্যন্ত কালোকচু, লতিরাজ কচু লাগানো যায়।
(গ) খরিফ-২ মৌসুম (আষাঢ়-আশ্বিন)-পূর্ব মৌসুমের সবজির পরিচর্যা করাসহ মৌসুমের প্রথমদিকেই বেগুন, দেশি শিম চাষ করা যায়। মধ্য শ্রাবণ হতে আগাম শীতকালীন সবজি চাষ করা যায়।
বড় পরিবারের জন্য পরিকল্পনা-বাড়ির আশপাশে অনাবাদি ও অন্যান্য পতিত জমিতে সবজি চাষের বারামেসি পরিকল্পনা পঞ্জিকা করা যেতে পারে। এজন্য সম্ভাব্য সবজির ধরন অনুযায়ী তালিকা ও পরিকল্পনা প্রণয়ন করা উচিত। যেমন
রেল লাইনের ঢালে লতা জাতীয় সবজি যেমন : ধুন্দল, ঝিঙা, চিচিংগা, চালকুমড়া, মিষ্টিকুমড়া, লাউ, উৎপাদন করা যায়। বনায়ন করা হলে তাতে মেটে আলু লাগানো যায়। সড়ক বা বাঁধের পাশে মানকচু, পেঁপে, মিষ্টি আলুর লতা জন্মানো যায়! জমির আইলে শিম, বরবটি, শশা, ধনেপাতা, মিষ্টিকুমড়া, ক্ষীরা, স্কোয়াশ, করলা, গিমা কলমি, ঢেঁড়শ জন্মানো যায়। নিচের সারণিতে জমির আইল/সীমানা বেড়ায় সবজি চাষ করে কীভাবে লাভবান হওয়া যায় তা দেখানো হলো।
স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মন্দির, অফিস, আদালত ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের পাশের পতিত ছায়াযুক্ত স্থানে কালোকচু, মৌলভীকচু, ওলকচু, মানকচু লাগানো যায়। চাল বা বেড়ায় বাউনি দিয়ে উঠানোর সুবিধাযুক্ত স্থানে লতানো সবজি লাগানো যায়। আলো-বাতাসযুক্ত খোলামেলা স্থানে পেঁপে মরিচ বেগন, কপিজাতীয় সবজি লাগানো যায় । এতে করে জমির ব্যবহার নিশ্চিত হবে, পরিবেশ পরিচ্ছন্ন থাকবে এবং খাদ্য ঘাটতি ও পুষ্টিহীনতা দূরীকরণে সহায়ক হবে।
অনাবাদি ও পতিত জমিতে শাক-সবজি চাষের ফলে অনেক লোকের কর্মসংস্থান হবে এবং জাতীয় আয় বৃদ্ধি পাবে।
সারণিঃ জমির আইল/সীমানা বেড়ায় সবজি চাষের হিসাব (জমির পরিমাণ ২ শতক)
সবজি চাষের মাধ্যমে বেকার সমস্যা সমাধান ও পারিবারিক আয় বৃদ্ধি
আমাদের দেশে প্রায় ১০০ ধরনের ফসল চাষাবাদ হয়ে থাকে। তারমধ্যে ৬০ এর অধিক শাক-সবজি। তবে
এর মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে ২০টির মতো ফসল চাষাবাদ হয়ে থাকে। ২০০৭-২০০৮ সনের কতিপয় প্রধান কৃষি ফসল চাষাধীন জমির তথ্যে দেখা যায় যে ধান, গম, ভূট্টা ও শাকসবজির ফলনে ও কর্মসংস্থানের যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। যা থেকে সহজেই বাঝো যায় যে বেকার সমস্যা সমাধানে সবজি চাষের যথেষ্ট গুরুত্ব আছে।
ফসলের নাম | উৎপাদন সন | চাষাধীন জমি (লাখ হেক্টর) | উৎপাদন (লাখ টন) | মন্তব্য |
ধান | ২০০৭-২০০৮ | ১১৫.৩৫ | ৩১৯.৭৫ | সম্পূর্ণ পানি নির্ভর ও সকল ফসলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পানির প্রয়োজন হয়। |
গম | ২০০৭-২০০৮ | ৭.৬৫ | ৯.৫৬ | স্বল্পকালীন শীতে ফলনে প্রচন্ড প্রভাব পড়ে। |
ভূট্টা | ২০০৭-২০০৮ | ৩.৮২ | ২৩.৬১ | বিদেশ নির্ভর বীজের কারণে উৎপাদন ঝুঁকিপূর্ণ |
সবজি | ২০০৭-২০০৮ | ৬.৫১ | ৮৯.১০ | স্বল্প সময়ে ও পরিকল্পিতভাবে পতিত ও অনাবাদি জমি ব্যবহার করা যায়। |
খাদ্যশস্য ও শাকসবজির তুলনামূলক বিবরণী
হেক্টর প্রতি খাদ্য উৎপাদন- অধিকাংশ সবজিই দানাজাতীয় শস্যের চেয়ে অনেকগুণে বেশি ফলনশীল। যেখানে বিশ্বে টমেটো, বাঁধাকপি, গাজর, আলু ইত্যাদি সবজির হেক্টর প্রতি গড় ফলন ২০ টনেরও বেশি, সেখানে সর্বাধিক ফলনশীল দানাশস্য ভূট্টার হেক্টর প্রতি ফলন চার টনেরও কম এবং গম ও চাউলের ফলন যথাক্রমে ২.৫০ ও ৪.০০ টনের মত।
সারণিঃ বিশ্বের কয়েকটি দেশের সবজি ও দানাজাতীয় ফসলের গড় ফলন
দানাজাতীয় ফসলের তুলনায় শাক-সবজি কম জমিতে বেশি উৎপাদন করা যায়। দানাজাতীয় ফলস উৎপাদনের জন্য যে শ্রমিক প্রয়োজন হয়, তার চাইতে ৫-৭ গুণ বেশি শ্রমিক প্রয়োজন হয় শাক-সবজি চাষে। খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা পূরণে বর্তমানে যে সবজি উৎপাদন হয় তার চাইতে ৭-৮ গুণ বেশি পরিমাণ সবজি উৎপাদন করা প্রয়োজন। এই বিপুল পরিমাণ সবজি উৎপাদনের জন্য বহু শ্রমের প্রয়োজন। তাছাড়াও দেশের চাহিদামতে বাড়তি সবজি উৎপাদনের জন্য বীজ উৎপাদন ও সংরক্ষণ, সবজি পরিবহন, প্যাকিং, কিছু অংশ সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণের কাজে ৫০-৬০ লক্ষ শিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত লোকের শ্রমের সুযোগ সৃষ্টি হবে। সবজি চাষ . যেহেতু সারা বছরই করা হয় এবং সবজি চাষে অত্যন্ত নিবিড় শ্রমের দরকার হয়, তাই সবজি চাষের মাধ্যমে বেকার সমস্যা সমাধান করা সম্ভব। দানা শস্য ও সবজি চাষে খরচের হিসাব থেকে বাঝো যায় যে সবজি চাষে মুনাফা অনেক বেশি, যা পারিবারিক আয় হিসেবে যোগ হতে পারে। নিচের ছকে ধান, গম, ভূট্টা, আলু, গিমাক- লমি, ঝাড়শিম, লালশাক, লতানো সবজির মোট পরিবর্তনশীল খরচ ও মোট প্রাপ্তি টাকায় দেখানো হলো ।
শাকসবজি উৎপাদনের জন্য সীমিত জমিতে যেহেতু বেশি শ্রমিক প্রয়োজন হয়, সেহেতু বেকার জনসংখ্যার জন্য সবজি উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাড়তি কাজের সুযোগ আছে। আমাদের দেশের সবজিগুলোকে মৌসুম অনুযায়ী ৩ ভাগে ভাগ করা যায়। যেমন : শীতকালীন, গ্রীষ্মকালীন ও বারমাসি ।
সবজি চাষের সুবিধা
(ক) অল্প পরিমাণ জমিতে অনেক প্রকার সবজি করা যায়।
(খ) সবজি চাষে অপেক্ষাকৃত সময় কম লাগে এবং একই জমিতে বছরে কয়েকবার সবজি চাষ করা যায়।
(গ) পুষ্টির দিক থেকে সবজির মান উন্নত এবং সারা বছর পুষ্টি পাওয়া যায় ।
(ঘ) অল্প জমিতে অধিক উৎপাদনের কারণে চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি সবজি বিক্রয় করে আয়ের সংস্থান করা যায়।
(ঙ) অল্প জমিতে অনেকবার সবজি চাষের সুবিধার কারণে কর্মের সংস্থা ।
(চ) পরিবারে মেরে ছেলে অবসর সময়ে বিনাদেন হিসেবেও কাজ করতে পারে।
(ছ) সবজি চাফের জন্য বেশি পুঁজি এবং বেশি জমির প্রয়োজন হয় না।
(জ) সবজি চাষে কৃষকের পড় আয় বৃদ্ধি (উপরের চিত্রে দেখানো হলো)।
সবজি চাষে বেকারদের এর সুযোগ ও আয়ের হিসাব
ক) বছরব্যাপী ১ শতক জমিতে ১৩ প্রকার সবজি চাষ করে ১ বছরে মোট ২৯৬ কেজি সবজি উৎপাদন করা যায়। যার স্থানীয় মূল্য ৩১৭৩/- টাকা এবং উৎপাদন ব্যয় হয় প্রায় ১০০০/- টাকা ।
সবজি চাষের মাধ্যমে বেকাররা কিভাবে সারা বছর কাজ করতে পারে এবং পারিবারিক আয় বৃদ্ধি করতে পারে তার আয়-ব্যয়ের হিসাব নিচের সারণিতে দেখানো হলো। শুধু ২.৫ শতক জমিতে সারা বছর সবজি চাষের মাধ্যমে সারাবছর কাজের সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে এবং সবজি খাওয়া বাদে বাড়তি আয় করা যায়। সারণিতে শুধু ২.৫ শতক জমিতে সবজি চাষ করে বছরে খাওয়া বাদে নগদ টাকা আয় করা সম্ভব। সামগ্রিকভাবে ২১৬০/- টাকা খরচ করে ৬২২৫/- টাকা আয় করা যায়। অর্থাৎ ১টাকা ব্যয় করে ৩/- টাকা আয় করা সম্ভব।
শাকসবজি উৎপাদনে জমি তৈরি, চারা/বীজ রোপণ ও ফসল বাজারজাতকরণ ব্যতিত অন্যান্য কাজ যেমনঃ আন্তপরিচর্যা, পানি দেওয়া, ফসল কাটা এবং খাদ্য তৈরির কাজে প্রধানত বাড়ির মেয়েরাই বেশি ভূমিকা রাখে । তাই পারিবারিক পর্যায় হতে ছেলে-মেয়েরা বা গৃহিণীরা শ্রম দেয়ার ফলে তাদের কাজের সংস্থান হয় এবং লাভজনক একটা ভাল বিকল্প উপায় পাওয়া যায়। নিচের সারণিতে সারা বছর শাক-সবজি উৎপাদনে পারিবারিক শ্রম ব্যবহার (%) দেখানো হলো ।
সারণি : সারা বছর শাক-সবজি উৎপাদনে পারিবারিক শ্রমের ব্যবহার % ।
কাজের বিবরণ | পুরুষ | ছেলে-মেয়ে/এবং গৃহিনী |
জমি তৈরি | ৯৮ | ২ |
বীজ রোপন/বপন | ৬০ | ৪০ |
আন্তপরিচর্যা | ২০ | ৮০ |
ফসল কাটা/তোলা | ৮ | ৯২ |
খাদ্য তৈরি | ০ | ১০০ |
বাজারে বিক্রি | ৮৩ | ১৯ |
বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সবজি চাষের প্রয়োজনীয়তা
বাংলাদেশে সবজি চাষের জন্য আবহাওয়া ও মাটি যথেষ্ট উপযোগী। বাড়ির আশেপাশে, ঘরের চালে, বেড়ার উপরে, অন্য গাছের উপরে বাইয়ে দিয়ে, জমির আইলে, অন্য ফসলের মধ্যে মিশ্র বা সাথী ফসল হিসেবে সবজি চাষ করা হয়। সবজির বৈচিত্রতাও উৎপাদনের জন্য অতিরিক্ত সুযোগ আছে। কেননা কোন কোন সবজি সারা বছর জন্মে, আবার কোন কোন সবজি শীতে বা গ্রীষ্মে জন্মে থাকে। উঁচু, মধ্যম, নিচু বা পানি জমে এরূপ ভিন্ন ভিন্ন স্থানের জন্য ভিন্ন ভিন্ন ধরনের সবজি আছে । তেমনি বেলে, বেলে দোঁআশ বা এঁটেল মাটির উপযোগী পৃথক পৃথক সবজি রয়েছে । যে কারণে একটু সচেতন, উদ্যোগী ও যত্নশীল হলে সারা বছর এক এক ধরনের জমিতে এক এক ধরনের উন্নত জাতের ও মানসম্পন্ন সবজি জন্মানো সম্ভব। অথচ পৃথিবীর অনেক দেশেই উপযুক্ত আবহাওয়ার অভাবে শাক-সবজি চাষ করতে পারে না। কিন্তু বাংলাদেশের জলবায়ু ও মাটি সবজি চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী। মধ্যপ্রাচ্য, ইউরাপে ও অন্যান্য অনেক দেশে সবজির প্রচুর চাহিদা আছে। তাই সুপরিকল্পিতভাবে উৎপাদন কর্মসূচি গ্রহণ ও চাহিদাকৃত দেশের সাথে অগ্রিম চুক্তি এবং এলাকা ও কৃষক নির্বাচন করে সবজি উৎপাদন করা যেতে পারে। আর অনায়াসে তা সংরক্ষণ ও রপ্তানী করা সম্ভব। এভাবে প্রতি বছর সবজি রপ্তানীর মাধ্যমে বিশ্ব বাজার থেকে কোটি কোটি বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা যায়। আমরা যদি শুধু জৈব কৃষির মাধ্যমে শাক-সবজি উৎপাদন ও রপ্তানী করতে পারি তাহলে স্বাভাবিক বাজার অপেক্ষা কয়েকগুণ বেশিদামে তা বিক্রি করা যাবে। বাংলাদেশ থেকে রপ্তানীযোগ্য সবজিগুলো হলো গোল আলু, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লাউ, বেগুন, টমেটো, শশা, শিম, মিষ্টিকুমড়া, করলা, ঢেঁড়শ, পটল, বরবটি, মূলা, কাঁচকলা, পেঁপে, কচুরলতি, মিষ্টি আলু ও মিষ্টি আলুর পাউডার, কাঁচা মরিচ ইত্যাদি।
বিগত কয়েক বছর যাবৎ বাংলাদেশ হতে কিছু কিছু শাক-সবজি বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। বাংলাদেশের কোন কোন রপ্তানীকারক ইল্যান্ড ও মধ্যপ্রাচ্যে সবজি প্রেরণ করছে। বিদেশে বিশেষ করে কিছু কিছু নির্দিষ্ট সবজির চাহিদা অনেক। কিন্তু সেগুলো বাংলাদেশের আদি সবজি নয়। অর্থাৎ অপ্রচলিত সবজি। তাই বিদেশের বাজার চাহিদা অনুযায়ী সেগুলোর উৎপাদন পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত। যেমন- ক্যাপসিকাম, ব্রকোলী, লেটুস, বীট, শালগম, চীনাবাঁধাকপি, সিলারী, গাজর, মূলা ইত্যাদি।
বাংলাদেশের আবহাওয়ায় এসব সবজি অনায়াসে উৎপাদন করা যায়। তাই এসব সবজি পরিকল্পিতভাবে উৎপাদন করে নিশ্চিতভাবে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা যায়।
পৃথিবীর অনেক দেশেই মাটি ও আবহাওয়া সারা বছর সবজি চাষের উপযোগী নয়। অথচ তাদের দৈনিক মাথাপিছু সবজি খাওয়ার পরিমাণ বাংলাদেশের তুলনায় অনেক বেশি। যেমন-জাপানে ৪৫০ গ্রাম, যুক্তরাজ্যে প্রায় ৫০০ গ্রাম, যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৪০০ গ্রাম। তাই আমরা এ সমস্ত দেশের পছন্দমত চাহিদা জেনে উৎপাদন করে রপ্তানীর সুযোগ গ্রহণ করতে পারি। এক হিসেবে দেখা যায় ১৯৮৭ সনে ১০,০০০ মেট্রিক টন সবজি রপ্তানী করে উল্লেখযোগ্য পরিমাষ বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছে। জুলাই ১৯৯৯ হতে জানুয়ারি ২০০০ পর্যন্ত ব্যাক ও বাঁধন এন্টারপ্রাইজ শুধু যুক্তরাজ্যে ফ্রেঞ্চ বীন, বেবি বীন, সবুজ মরিচ, ঢেঁড়শ, করলা, লংবীন, কচুর লতি ও অন্যান্য সবজি প্রায় ৬১ মে.টন রপ্তানী করেছে। হর্টেক্স ফাউন্ডেশন জুলাই ১৯৯৯ হতে জুন ২০০২ পর্যন্ত ফ্রেঞ্চ বীন, বেবি বীন, সবুজ মরিচ, ঢেঁড়শ, করলা, লং বীন প্রায় ৭৫০ মে.টন রপ্তানীর পরিকল্পনা করে তা প্রায় অৰ্জন করেছে, যার দ্বারা প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশে সবজি উৎপাদন এলাকা এবং একক জমিতে গড় ফলন কম। তাই যুগসই, লাগসই ও টেকসই প্রযুক্তির মাধ্যমে সবজি চাষের এলাকা ও হেক্টর প্রতি ফলন বৃদ্ধি করে রপ্তানী সম্প্রসারণ করা যায়।
বাংলাদেশের লোকজনের চাইতে উন্নত দেশগুলোর লোকজন খাদ্য ও পুষ্টি সম্পর্কে বেশি সচেতন। যেহেতু সবজিতে পুষ্টি উপাদান বেশি তাই তারা মাথাপিছু বেশি পরিমাণে সবজি গ্রহণ করে। অথচ তাদের উৎপাদনের সুবিধা আমাদের দেশের চাইতে কম। এ কারণে উন্নত দেশের রুচি ও চাহিদার ভিত্তিতে সবজি উৎপাদন ও রপ্তানী করে সবজি রপ্তানী ব্যবস্থাকে লাভজনক হিসেব প্রতিষ্ঠিত করা যায়। শাক-সবজি দ্রুত পচনশীল, সামান্য অব্যবস্থাতেই মান খারাপ হতে পারে, পরিবহনের জুটিতে বিনষ্ট হতে পারে, সংগ্রহ ও সংরক্ষণের কারণে বিনষ্ট বা পচে যেতে পারে। তাই শাক-সবজি টাটকা, সতেজ ও মান ঠিক রেখে দ্রুততার সাথে ভোক্তার নিকট বা বিক্রয়ের স্থানে পৌঁছাতে হয়। এজন্য সবজি সংগ্রহ করে নিরাপদভাবে সংরক্ষণ, গ্রেডিং, পরিষ্কারকরণ, প্যাকেজিং ও উপযুক্ত পরিবহন ব্যবস্থায় দ্রুততার সাথে পৌঁছানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন। পরিবহন ভাড়া ও প্যাকেজিং খরচ যথাসম্ভব কম করে সড়কপথ, রেলপথ, নদীপথ ও আকাশপথের যোগাযোগ ব্যবস্থাগুলোকে একক সংযোগের আওতায় আনা দরকার। টাটকা অবস্থায় বিক্রয় স্থানে তাড়াতাড়ি পৌছানো হলে ভোক্তারা ক্রয়ে আগ্রহী হবে। সবজির মান ভাল থাকবে এবং বাজারমূল্যও বেশি পাওয়া যাবে।
বিভিন্ন হিসাব থেকে জানা যায় যে সবজির মোট উৎপাদন খরচের প্রায় অর্ধেক পরিমাণ বাজারজাতকরণে ব্যয় হয়। এজন্য বিদেশে ও সুপার মার্কেটগুলোতে উন্নতমানের সবজিগুলো পাঠাতে হয়। যেহেতু ঐ সব মার্কেটে বিক্রয় মূল্য/দাম বেশি । আমদানিকারক দেশ ও প্রতিষ্ঠানকে বাজারে প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশে টিকে থাকতে হলে সবজির মান ও মূল্য উভয়ই সংগতিপূর্ণ হতে হবে।
এক কথায় উত্তর
১. ধান উৎপাদনে কতদিন সময় লাগে ?
২. লাউ উৎপাদনে কত দিন সময় লাগে ?
৩. মানবদেহের গুরুত্বপূর্ণ ১টি পুষ্টি উপাদানের নাম লেখ ।
৪. বাংলাদেশ সরকারকে প্রতি বছর কত লক্ষ টন খাদ্য আমদানি করতে হয় ?
৫. প্রতি বছর কত হাজার শিশু অন্ধ হয়ে যায় ?
৬. ১৯৬২-৬৪ পর্যন্ত কয়টি পুষ্টি জরীপ হয় ?
৭. দেশের মোট জনসংখ্যার শতকরা কতজন দৃশ্যমান গলগন্ড রোগে ভোগে?
৮. প্রতি বছর কত % আবাদি জমি চাষের বহির্ভূত হচ্ছে?
৯. বাংলাদেশে মোট কত কিলোমিটার রেলপথ আছে ?
১০. খারিফ-১ মৌসুম ইংরেজি কোন মাস হতে কোন মাস পর্যন্ত হয়?
১১. বারোমাসি ১টি সবজির নাম লেখ
১২. বিশ্বে টমেটো, বাঁধাকপি, গাজর -এর হেক্টর প্রতি গড় ফলন কত?
১৩. একই পরিমাণ জমিতে দানাজাতীয় শস্য অপেক্ষ সবজি উৎপাদনে কতগুণ শ্রমিক বেশি দরকার হয়?
১৪. মৌসুম অনুযায়ী সবজিগুলোকে কয়টি ভাগে ভাগ করা যায় ?
১৫. সবজি চাষে ১ টাকা ব্যয় করে কত টাকা আয় করা সম্ভব ?
সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন
১. ২টি দানাজাতীয় ও ৩টি সবজি জাতীয় ফসলের হেক্টর প্রতি ফলন ও উৎপাদন সময় উল্লেখ কর।
২. গোমেজ ও ১৯৯৪ সনের ইউনিসেফ প্রকাশিত পুষ্টি জরিপের চিত্র তুলে ধর।
৩. ভূমিহীন ও প্রান্তিক পরিবারের জন্য শাক সবজি চাষের পরিকল্পনা প্রণয়ন কর।
৪. ৩ মৌসুমে উৎপাদনের জন্য প্রতি মৌসুমের ৫টি করে সবজির নাম লেখ।
৫. ১ শতক জমিতে সবজি চাষের আয় ব্যয়ের ১টি বিবরণী তুলে ধর।
রচনামূলক প্রশ্ন
১. খাদ্য ঘাটতি পূরণে সবজির উৎপাদনগত গুরুত্ব বর্ণনা কর।
২. অব্যবহৃত বা পতিত স্থানে সবজি উৎপাদনের গুরুত্ব বর্ণনা কর।
৩. ২.৫ শতক জমিতে খামার পদ্ধতিতে সবজি চাষের বৎসরভিত্তিক পরিকল্পনা তৈরি কর ।
আরও দেখুন...